প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সেক্রেটারি ইহসানুল করিম বলেন, ‘বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোভিড-১৯ টিকা নিয়েছেন।’
এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহেনা করোনাভাইরাসের টিকা নেন।
গত ২৮ জানুয়ারি রাজধানীর ৫টি হাসপাতালে প্রথমবারের মতো করোনার টিকা দেয়া হয়। পরে গত ৭ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়।
ইতিমধ্যেই অনেক বিশেষ ব্যক্তি ও মন্ত্রীরাও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন।
দেশব্যাপী ১০০৫টি কেন্দ্রে করোনার টিকা দেয়া হচ্ছে।
এর আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি অবশ্যই টিকা নেব, তবে আমি চাই দেশের জনগণ প্রথমে এটি গ্রহণ করুক। যদি আমার একটা টিকার জন্য আরেকটা মানুষের জীবন বাঁচে সেটাই তো সবচেয়ে বড় কথা! তাই না?’
এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়া উপলক্ষে ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্সে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে এটির আয়োজন করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের কত পার্সেন্ট মানুষ আগে টিকা নিতে পারল, তিনি আগে তা দেখতে চান। ‘আমাদের একটা টার্গেট করা আছে। সে পরিমাণ যখন দেয়া হবে, তখন টিকা যদি বাঁচে, তখন আমারটা আমি নেব,’ বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার একটি অভিযান পরিচালনা করছে যাতে গ্রাম পর্যায়ের প্রত্যেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুযায়ী ভ্যাকসিন নিতে পারে।
ভ্যাকসিন কার্যক্রম থেকে কেউ যেন বাদ না পড়ে সরকার সেই পদক্ষেপ নিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আরও তিন কোটি টিকা আনার ব্যবস্থা করছি। আমরা প্রথম ডোজের পরেই যাতে দ্বিতীয় ডোজ পেতে পারি সেই পদক্ষেপ নিচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, যদি কোনো দেশ ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে ব্যর্থ হয় তখন বাংলাদেশ সেটি করবে।
‘আমি ইতোমধ্যে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোকে নির্দেশ দিয়েছি, যারা এটি প্রস্তুত করতে সক্ষম, তারা যেন প্রস্তুত থাকে। আমরা ভ্যাকসিনের বীজ আনতে চাচ্ছি।’
বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি
দেশে ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও শনাক্ত বেড়েছে বলে বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে আট হাজার ৪৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬১৯ জনের শরীরে নতুন করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪৯ জনে পৌঁছেছে।
এর আগে বুধবার অধিদপ্তর জানায়, আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে পাঁচজনের মৃত্যু এবং ৬১৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ২১৯টি পরীক্ষাগারে ১৬ হাজার ১৪৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। অ্যান্টিজেন টেস্টসহ পরীক্ষা করা হয় ১৫ হাজার ৯৮৫টি নমুনা।
গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৩.৮৭ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
নতুন যে সাতজন মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ পাঁচ এবং নারী দুজন। এখন পর্যন্ত মোট মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ৬ হাজার ৩৭৭ জন বা ৭৫ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং নারী ২ হাজার ৫৮ জন বা ২৪ দশমিক ৪০ শতাংশ।
এদিকে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৮৪১ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৪৬৮ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমকি ২৩ শতাংশ।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা বিমসটেক মহাপরিচালকের